শিক্ষার্থীদের ফেসবুক আসক্তি ও ভয়াবহ কুফল
শিক্ষার্থীদের ফেসবুক আসক্তি ও ভয়াবহ কুফল

টেক সংবাদ

তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে যোগাযোগের জন্যে সোশ্যাল মিডিয়ার গুরম্নত্ব ও প্রভাব অনস্বীকার্য। পারস্পরিক যোগাযোগ, বার্তা আদান-প্রদান, মতামত প্রদান, ছবি শেয়ারিং ইত্যাদি আরও অনেক সুবিধার জন্যে ফেসবুক ব্যবহারের জুড়ি নেই। কমবেশি সব বয়সী মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করলেও আমাদের দেশে এই ব্যবহারকারীদের বেশিরভাগই ছাত্রছাত্রী ও তরম্নণ। তবে এই ফেসবুক ব্যবহারে সুফল থাকলেও রয়েছে এর ভয়াবহ কুফল।

ফেসবুক ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যম যেমন- টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট ইত্যাদিতে ঝোঁকে পড়েছে উঠতি বয়সের শিড়্গার্থীরা। খেতে, বসতে, শুতে এমনকি রাত জেগে শিড়্গার্থীরা ফেসবুকে অযথা মূল্যবান সময় নষ্ট করে নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি শারীরিক, স্বাস’্য ও চোখের ড়্গতি করেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে- এন্ড্রয়েড মোবাইলের নীল আলো অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ একাধিক গুরম্নত্বপূর্ণ উপাদানের ঘাটতির কারণ যা চোখের পাশাপাশি মরনব্যাধি ভয়ঙ্কর ব্রেস্ট এবং প্রস্টেট ক্যান্সার সৃষ্টির আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও এই নীল আলো মেলাটনিন হরমোন কমানোর সাথে সাথে রেটিনার কর্মড়্গমতাও কমিয়ে দেয় ফলে কমে যায় দৃষ্টিশক্তি। এতে করে ছাত্রছাত্রীদের কর্মড়্গমতা ও স্মৃতিশক্তি ক্রমশ লোপ পাচ্ছে।

গত ২০১৭ সালের এপ্রিলে যুক্তরাজ্যে নিবন্ধিত ‘উই আর সোশ্যাল লিমিটেড’ ও কানাডার হুটস্যুট ইনকরপোরেশন’র এক যৌথ প্রতিবেদনে জানা যায়, থাইল্যান্ডের ব্যাংকক শহরের পরেই সক্রিয় ফেসবুক ব্যবহারকারী হিসেবে ঢাকা এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। তবে দেশ হিসেবে শীর্ষ ১০ ফেসবুক ব্যবহারকারীর তালিকার প্রথম অবস’ানে যুক্তরাষ্ট্রের নাম থাকলেও তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই। ইতিপূর্বে মাননীয় বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ গত বছরের ১৪ই নভেম্বর জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে সরকারকে শিড়্গার্থীদের জন্য রাত ১২টা থেকে সকাল ৭টা পর্যনত্ম ফেসবুক বন্ধ রাখার দাবি তুলেন। যদিও এখন পর্যনত্ম সরকারের পড়্গ থেকে এই ব্যাপারে কোন কার্যকর পদড়্গেপ নিতে দেখা যায়নি। সমপ্রতি প্রায় ১০ হাজার ব্রিটিশ ছাত্রের উপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ৫ ঘণ্টা বা তার কম সময় ঘুমায়, তাদের স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা সাধারণ মানুষের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ঘুমের সঙ্গে হার্ট এবং ব্রেনের স্বাসে’্যর সরাসরি যোগ রয়েছে। তাই ঘুম কম হলে বিষণ্নতা, মনোযোগ দেয়ার ড়্গমতা হ্রাস পাওয়া, দিনের বেলা ঘুম আসা, আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি, সহজেই ক্লানত্ম হয়ে যাওয়া বা রেগে যাওয়ার মত সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। ফলে কিশোর বা তরম্নণ-তরম্নণীরা পড়াশোনায় মনযোগ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় পরীড়্গায় ফলাফল খারাপ করছে। যা নিঃসন্দেহে যে কোন পিতা-মাতা বা পরিবারের জন্য রীতিমত উদ্বেগের বিষয়।

আর এতে করেই তরম্নণ প্রজন্মের একটা গুরম্নত্বপূর্ণ অংশ নিজের সুন্দর ভবিষ্যৎ হত্যার পাশাপাশি নিজেকে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে টেলে দিচ্ছে। তাছাড়া এই সব সাইটে অনৈতিক বিভিন্ন ভিডিও ক্লিপ, ফটো, অশস্নীল পেজ ইত্যাদিতে যুক্ত হয়ে নিজের চরিত্রকে অবেলায় কলুষিত করে দিচ্ছে।

ম্যাসেজিং, চ্যাটিং-এ রাত কাটিয়ে একে অপরের সাথে বিভিন্ন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে তরম্নণ-তরম্নণীরা।

এখনই শিড়্গার্থীদের এই ফেসবুক আসক্তি থেকে না বের করতে পারলে পরিবার, সমাজ, দেশ তথা জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার সুনিশ্চিত। এই ড়্গেত্রে পরিবারকেই সবচেয়ে বেশী সচেতন ও কঠোর হতে হবে। তার সাথে সরকারকেও অবশ্যই এই আসক্তি বন্ধে প্রয়োজনীয় পদড়্গেপ নিতে হবে।


  • Tags

সর্বশেষ সংবাদ

এই বিভাগের আরও খবর